মেডিকেল কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত ডিমলার হতদরিদ্র ভূপেন্দ্র অধিকারী’র!

 

নুরুজ্জামান সরকার, জেলা প্রতিনিধি (নীলফামারী):

 

নীলফামারী জেলার ডিমলার মেধাবী শিক্ষার্থী ভূপেন্দ্র অধিকারী। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান ভূপেন্দ্র।

ভূপেন্দ্র অধিকারী ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের দিঘির পাড় গ্রামের মতিলাল অধিকারী ও বাসন্তী অধিকারী দম্পতির সাত সন্তানের (৩ ছেলে ৪মেয়ে) মধ্যে পঞ্চম সন্তান।

হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান মেধাবী ভূপেন্দ্র ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভীষণ আগ্রহী। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তিনি বাড়ির পাশের ডালিয়া চাপানী উচ্চ বিদ্যালয়় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে রংংপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হন। এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ) ভর্তির সুযোগ পান তিনি। কিন্তু অদম্য মেধাবী ভূপেন্দ্র রায় মেডিকেলে ভর্তি সুযোগ পেয়েও এখন চরম হতাশায় পড়েছেন।

২০২০-২১ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় এবছর অংশগ্রহণ করে সরকারি ৩৭ টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে র‍্যাংকিং এ ১৩ তম মেডিকেল কলেজ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ) এ ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।তার এমবিবিএস রোলঃ ১৯০০৩৬৫ ।

কিন্তু অর্থাভাবে তার মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। কারণ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো কোনো টাকা-পয়সা নেই তার পরিবারের। তাই এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভূপেন্দ্র ও তার অভাবী পরিবার। তাহলে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েও কি অর্থাভাবে পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হবেন ভূপেন্দ্র? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মেধাবী ভূপেন্দ্র অধিকারীর মনে।

ভূপেন্দ্র বলেন, তিন ভাই ও চার বোন মিলে মোট সাত ভাইবোন। ভাইদের মধ্যে আমি সবচেয়ে ছোট এবং বড়ভাইয়েরা বিবাহিত ও অশিক্ষিত। তারা তাদের পরিবার নিয়ে নিজেরাই হিমসিম খাচ্ছে। প্রায়ই যায় ঢাকা বগুড়া বিভিন্ন স্থানে রিকশা চালাতে। অন্যদিকে বোনদের মধ্যে তিন বোনের বিবাহ হয়েছে আর এক বোন আছে যার দায়িত্ব আমার ওপর পড়েছে।

ভূপেন্দ্রর বাবা একজন ক্ষুদ্র বাদাম বিক্রেতা এবং মা একজন গৃহিণী। এতোদিন বাদাম বিক্রি করেই তিনি ভূপেন্দ্রর পড়াশোনার খরচ চালিয়েছিলেন। এখন তিনি অনেক বৃদ্ধ হয়েছেন এবং বাদামের ব্যবসা করার মতো সামর্থও তার আর নেই।

ভূপেন্দ্রর বাবা মতিলাল অধিকারী বলেন, ছেলেটাকে ঠিকভাবে লেখাপড়া খরচ দিতে পারেনি। তারপরও সে নিজের ইচ্ছেশক্তিতে ও আগ্রহে কঠিন পরিশ্রম করে লেখাপড়া অব্যাহত রেখেছে। এখন ছেলে মেডিকেল কলেজে ভর্তি সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে অনেক টাকা-পয়সা লাগবে। এত টাকা কিভাবে যোগাড় করবোতা ভেবেচিন্তে কোনো রকম কূল-কিনারা পাচ্ছি না।

তিনি আরও বলেন, সংসারে এমন কোনো সহায় সম্পদও নেই যে তা বিক্রি করে ছেলেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করাবো। তা ছাড়া ছেলেকে মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করাতেও প্রতিমাসে মোটা অঙ্কের খরচ লাগবে। সেই খরচই বা কিভাবে যোগাব আমি? তাই তিনি ছেলের মেডিকেল কলেজে ভর্তি ও লেখাপড়া চালিয়ে নিতে সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তশালীদের আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। আর তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মেধাবী ভূপেন্দ্রের সঙ্গে ০১৭৯২৭২৪৬০২ (বিকাশ ও ডাচ বাংলা একাউন্ট) নম্বর মুঠোফেনে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে